স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়েজেতে

 উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন  খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে চায়  তার পরিবার। আমরা জানতে পারি যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সরকারের অনুমোদনের জন্য চিঠি লিখেছিলেন।



খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বুধবার রাতে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে লিখিত আবেদন জমা দেন।লিখিত অনুরোধ পাওয়ার পরে তা রাতারাতি বিচার বিভাগের সচিবের কাছে মন্তব্যের জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল, বিভাগ সূত্র জানায়।


 স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার ভাই সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে স্বরাষ্ট্রসচিবের বাসায় গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে গেলে তিনি একটি চিঠি বা অনুরোধ জানান। তবে চিঠিতে কী লেখা হয়েছিল তা তিনি জানেন না।


এর আগের সোমবার শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে টেলিফোনে কথোপকথনে খালেদা জিয়াকে তার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন।



 সেদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের বিষয়ে পরিবার গণমাধ্যমকে অবহিত করেনি। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন। তিনি আমাদেরকে  বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডেকে আনা হয়েছিল।

 খালেদাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা তা বিএনপি জানায়নি, যদিও বিএনপির সভাপতি ও দলের সহ-সভাপতি এজেডএম জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়াকে দেশে আনার কথা বলেছিলেন। বিদেশী চিকিত্সা চাইছেন।

বিএনপির সভাপতি খালেদা জিয়া গত সোমবার থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাতাসের অভাবে তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিসিইউতে অবশ্য তার শারীরিক অবস্থার তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। শ্বাসকষ্টের সমস্যাটি সম্পূর্ণ নিরাময় হয়নি।


বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিত্সক প্রথম আলোকে বলেছিলেন যে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ইউসিসিতে ভর্তি হওয়ার পরে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তার থেকে শ্বাস নিতে তার সমস্যা পুরোপুরি হ্রাস পায়নি। অক্সিজেনের স্যাচুরেশন (দেহে দ্রবীভূত অক্সিজেনের স্তর) কখনও কখনও ৯০ বা তারও কম হয়। তবে, যখন তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয় তখন তিনি ৯৯ পর্যন্ত থাকেন  তার ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। ডাক্তার বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। তার জন্য গঠিত মেডিকেল কাউন্সিল অদূর ভবিষ্যতে পরবর্তী প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে। তারপরে পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছে।

ধরা। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে নেতিবাচক নয়, খালেদা জিয়ার চিকিত্সকরা বলেছেন যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে সংক্রমণের দুই সপ্তাহ পরে যদি কোনও লক্ষণ না থাকে তবে কোনও ব্যক্তির করোনার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকরা কাপুরুষোচিত রোগীর মতো আচরণ করছেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিত্সক ও বিএনপির প্রধান এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।


একই সঙ্গে বিএনপির রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন গতকাল ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো সরকারের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। আদালতের এখানে কোনও ভূমিকা নেই, এটি সম্পূর্ণ প্রশাসনিক আদেশ। তিনি বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার সাজা ফিরিয়ে দেওয়াও সম্পূর্ণ প্রশাসনিক আদেশ। আদালতের জন্য কোনও কাগজপত্র নেই। এই ক্ষেত্রে একই প্রযোজ্য।


দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আনা দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তাকে নির্বাহী শাখার আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়া দরকার।